খাদ্যের গুনাগুণ

ক্যামিকেলমুক্ত পরিপক্ক আম কীভাবে চিনবেন?

ফরমালিনমুক্ত আম চেনার উপায়

প্রতিবছর গ্রীষ্মকাল এলেই আমাদের অফিসের খোরশেদ ভাইয়ের মুখ চোখ শুকিয়ে যায়। কারণ তার বাচ্চারা আম-কাঁঠাল-লিচুর মতো গ্রীষ্মকালীন ফলো মূল খেতে খুব পছন্দ করে। কিন্তু খোরশেদ ভাই ভেজালের ভয়ে এসব কিনতে অনিচ্ছুক। তার ভয় হয় যে- বিভিন্ন রাসায়নিক পদার্থ দিয়ে তাজা রাখা এই সব ফল খেলে ছেলে মেয়েরা অসুস্থ হয়ে যাবে। তবে এই বছর খোরশেদ সাহেবের মুখে হাসি দেখা যাচ্ছে! কারণ কিছুদিন তিনি জানতে পেরেছেন যে ক্ষতিকর কেমিক্যালমুক্ত আম চেনার উপায় রয়েছে!

ঘটনাটি জেনে নেই চলুন…

খোরশেদ সাহেবের চোয়াল শক্ত হয়ে আছে। বোঝাই যাচ্ছে মেজাজ-মর্জি খারাপ তাঁর অনেক। পাশের টেবিলের হাশেম সাহেব বিষয়টা লক্ষ্য করলেন।

– কি অবস্থা খোরশেদ ভাই? মনমেজাজ খারাপ মনে হচ্ছে?
– দুঃখের কথা আর কি বলব ভাই!
– কি হয়েছে ভাই? বলেন!
– এতোগুলা টাকা গচ্চা খেলাম কালকে!
– ওমা কেন?
– সারাটা বছর এই গ্রীষ্মকালের জন্য অপেক্ষা করি একটা কারণেই। পাকা আম খেতে পারবো বলে! কালকে অনেক সাধ করে একশ’ দশ টাকা কেজি করে ১০ কেজি হিমসাগর কিনলাম, কিন্তু হিমসাগরের নাম করে সেই ব্যাটা আমাকে যা দিল! বাসায় এনে সেই আম মুখে নিতেও পারিনা, এতটাই টক আর বিস্বাদ! কে জানত সুন্দর রঙিন আমগুলো খেতে এতটা বিস্বাদ হবে! পুরো টাকাটাই পানিতে!
– আহারে! একটু দেখবেন না!
– কিভাবে চিনব বলেন? বোঝাই তো যায়না কোনটা আসল গাছপাকা আম আর কোনটা ফরমালিন দেওয়া আম!
– খোরশেদ ভাই, খুব সহজ কিছু পদ্ধতিতে চিনতে পারবেন কোন আম ক্যামিকেল দেওয়া আর কোনটা না!
– আচ্ছা তাই নাকি? কিভাবে ভাই?
– শুনুন তাহলে…

কার্বাইড ও অন্যান্য কেমিক্যাল যুক্ত আমের ক্ষতিকর দিক

ছোটবেলা থেকেই আমরা জেনে এসেছি যে ফলের রাজা আম। পাকা আমের মত সুস্বাদু ফল খুব কমই আছে। গ্রীষ্মকালের প্রচণ্ড দাবদাহে একটা গাছপাকা আম আপনাকে সুমিষ্ট প্রশান্তির স্বাদ এনে দিতে পারে। গ্রীষ্মের মৌসুমী ফলগুলোর মধ্যে আমের আবেদন সার্বজনীন। আমের যেমন ঘ্রাণ, তেমনি মজাদারও বটে। কিন্তু যুগটা যেহেতু ভেজালের, তাই বাজারের সব আমই যে গাছপাকা, তা কিন্তু নয়। বরং রাসায়নিক পদার্থ দিয়েও পাকানো হচ্ছে আম। ফলে আম যেখানে শরীরের জন্য উপকারী হওয়ার কথা সেখান কার্বাইড মিশ্রিত হওয়ায় তা হয়ে উঠছে শরীরের জন্য ক্ষতিকর। আমের এই মৌসুমে রমরমা ব্যবসা করতে অসাধু ব্যবসায়ীরা রাসায়নিক পদার্থ দিয়ে দ্রুত আম পাকান। তাই বাজারে আম কিনতে গেলে বিপাকে পড়ে যান সাধারণ মানুষ। তারা বুঝে উঠতে পারেন না কোন আমে রাসায়নিক পদার্থ আছে, আর কোন আমে রাসায়নিক পদার্থ নেই। আম কেনার সময় আপনাকে সচেতন থাকতে হবে যে, তা রাসায়নিকমুক্ত কিনা। কেননা এর উপরেই নির্ভর করছে আপনার আর আপনার পরিবারের সুস্বাস্থ্য।

রাসায়নিকমুক্ত আম চেনার উপায়

এক নজরে দেখে নিন রাসায়নিকমুক্তমুক্ত আম চেনার উপায় এবং কিভাবে চিনবেন গাছপাকা আম!

– গাছপাকা আমের উপর অবশ্যই মাছি বসবে

আম কিনতে গেলে একটি বিষয় অবশ্যই খেয়াল করবেন তা হল- আমের ওপর মাছি বসে কিনা। আমে রাসায়নিক বা কার্বাইড দেওয়া থাকলে সে আমের উপরে কখনই মাছি বসবে না।

– গাছপাকা আমের গায়ে সাদাটে ভাব থাকবে

গাছপাকা আম হলে দেখবেন, আমের গায়ে এক ধরণের সাদাটে ভাব থাকে, সেরকম রঙিন ভাব থাকেনা। কিন্তু কার্বাইড বা অন্য রাসায়নিকে দেওয়া আম হয় সুন্দর, দাগহীন ও পরিষ্কার।

– গাছপাকা আমের গায়ে অনেক দাগ থাকে

গাছপাকা আমের ত্বকে দাগ থাকে। রাসায়নিকে পাকানো আমের গা হয় দাগহীন। কারণ কাঁচা অবস্থাতেই পেড়ে কার্বাইড দিয়ে পাকানো হয়।

– কেমিক্যাল যুক্ত আমের কোন সুস্বাদ বা টক-মিষ্টি গন্ধ নেই

আম কেনার পর সেই আম মুখে দেয়ার পর যদি দেখেন যে আমে কোন সৌরভ নেই কিংবা আমে টক-মিষ্টি কোনো স্বাদই নেই- বুঝবেন যে সে আমে কার্বাইড জাতীয় কোন রাসায়নিক দ্রব্য দেওয়া হয়েছে।

– বদ্ধ জায়গায় আম কিছুক্ষণ রাখুন

আম কেনা হলে কিছুক্ষণ রেখে দিন। এমন কোথাও রাখুন যেখানে বাতাস চলাচল করে না। গাছপাকা আম হলে কিছুক্ষণ পর গন্ধে মৌ মৌ করবে চারপাশ। ওষুধ দেয়া আমে এই সুমিষ্ট গন্ধ পাওয়াই যাবে না।

– খোসার রঙের ভিন্নতা

গাছপাকা আমের গায়ের রঙও আলাদা। গোড়ার দিকে একটু গাঢ় রঙ থাকে গাছপাকা আমে। রাসায়নিক পদার্থ দিয়ে পাকানো আমের আগাগোড়া হলদে রঙ হয়ে যায়। হিমসাগর সহ আরও বেশ কিছু জাতের আম পাকলেও সবুজ থাকে। গাছপাকা হলে এসব আমের ত্বকে কালো কালো দাগ পড়ে। রাসায়নিক দিয়ে পাকানো হলে আমের ত্বক হয় মসৃণ ও সুন্দর।

– আমের সুমিষ্ট গন্ধ পাওয়া যাবে

ক্যামিকেলমুক্ত আম চেনার উপায় একটি উপায় হচ্ছে গন্ধ শুকে দেখা। আম কেনার আগে নাকের কাছে নিয়ে ভালো করে শুকুন। গাছপাকা আম হলে অবশ্যই বোঁটার কাছে চেনা গন্ধ পাবেন। ওষুধ দেওয়া আমে গন্ধ খুব বেশি থাকে না কিংবা বাজে বা ঝাঁজালো গন্ধ থাকে। ফলে বোঝা যায় যে আমটা আসলে গাছপাকা না।

ক্ষতিকর কেমিক্যাল মুক্ত গাছপাকা আম খেতে চান?

আপনারা জানেন যে বাংলাদেশের আমের সিংহভাগ উৎপাদিত হয় উত্তর বঙ্গে। ফলে ঐ অঞ্চল ব্যতিত দেশের অন্যান্য যায়গার মানুষের পক্ষে গাছপাকা কেমিক্যাল মুক্ত আম পাওয়া বেশ কষ্টকর ব্যাপার হয়ে দাঁড়ায়। এক্ষেত্রে খাসফুড অনলাইন শপ প্রতিবছর সারাদেশে সুস্বাদু ও নিরাপদ আম সরবরাহের ব্যবস্থা নিয়ে থাকে। আমরা সরাসরি রাজশাহী থেকে গাছ পাকা আম এনে গ্রাহকদের মাঝে সুলভ মূল্যে সরবরাহ করে থাকি। আপনি যদি ক্যামিকেলমুক্ত আম কিনতে ইচ্ছুক হন, তাহলে আজই অগ্রিম অর্ডার করুন। নির্দিষ্ট সময়ে আমরা আম পৌঁছে দেবো আপনার ঠিকানায়।

অর্ডার করার জন্য আজই ফিল আপ করুনঃ আম অর্ডার ফর্ম 

———————–

আরও পড়ুনঃ

জেনে নিন আমের পুষ্টিগুণ সম্পর্কে

ফরমালিন দূর করার উপায়

Leave a Reply