অন্যান্য, খাদ্যের গুনাগুণ

লাল আমন চাল

আমন-চাল

বাংলাদেশ একটি কৃষিপ্রধান দেশ। এখানে বেশিরভাগ কৃষকই কম বেশি ধান চাষ করে থাকেন। আমাদের দেশে কয়েক ধরনের ধান উৎপন্ন হয়। তবে সবচেয়ে বেশি উৎপন্ন হয় আমন ধান। আমন ধান থেকে যে চাল তৈরী করা হয় সেটিই আসলে আমন চাল। এই ধান সাধারণত নভেম্বর-ডিসেম্বর মাসে ঘরে তোলা হয়। যা সারা বছর খাওয়া কিংবা বিক্রি করা হয়।

সেই অনাদীকাল থেকেই বাংলাদেশের মানুষ ভাতের উপর নির্ভরশীল। বাংলাদেশীদের গৃহীত মোট ক্যালরির বেশিরভাগ অংশই আসে ভাত থেকে। এদেশের প্রান্তিক জনগণ তাদের জীবন ধারণ করে মোটামুটি ভাত খেয়েই। সুতরাং, বাংলাদেশের মানুষের পুষ্টি উন্নয়নে খুব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে এই চাল।

আসলে এই চালের রয়েছে ভিন্ন কিছু গুণ যা মানুষকে খুব সহজেই আকৃষ্ট করে। এর রয়েছে বিশেষ সুগন্ধ যা যে কোন মানুষকে আকর্ষিত করার জন্য যথেষ্ট। এই চালের চার পাশের আবরণটি বিশেষত বাদামী রঙের যাতে রয়েছে মানবদেহের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ন পুষ্টি উপাদান। মূলত এই সকল পুষ্টি উপাদান নিয়মিত পেতে আমাদের এই চাল খাওয়া উচিত।

তাছাড়া এর আরও কিছু গুণ রয়েছে যা একে অন্য চালের থেকে আলাদা করেছে যেমন রান্না করতে খুবই কম সময় লাগে, হজম হয় আস্তে আস্তে ফলে ক্ষুদা লাগে কম ও দানা চিকন ইত্যাদি। এই সকল গুণের জন্যই এই চাল বেশিরভাগ মানুষই পছন্দ করেন। আমাদের দেশে সারা বছর জুড়েই এই ধানের চাল পাওয়া যায়। দেশের মানুষের মূল চালের যোগান আসে এই ধান থেকে।

আমন চালের পুষ্টি উপাদান

এই ধরনের চালে বিদ্যমান রয়েছে নানা ধরনের পুষ্টি উপাদান। তন্মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টি উপাদানগুলো হলো শর্করা, ফাইবার, পটাসিয়াম, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, জিংক, আয়রন, ভিটামিন বি কমপ্লেক্স, ম্যাংগানিজ ও সেলেনিয়াম ইত্যাদি। সকল পুষ্টি উপাদানেরই আমাদের দেহে আলাদা আলাদা ভূমিকা রয়েছে। তবে চাল বা ভাতের থেকে আমরা সবচেয়ে বেশি পরিমানে যেটি পাই সেটি হলো শর্করা বা কার্বোহাইড্রেট। চালের ভ্যারাইটি আলাদা হওয়ার কারনে এতে শর্করার পরিমাণের তারতম্য ঘটে।

যেমন সাদা চালে ফাইবার বা আঁশের পরিমাণ অনেক কম কিন্তু লাল আমন চালে ফাইবারের পরিমান ন্যাচারালি বেশি থাকে। কোন খাবারে কি পরিমান শর্করা আছে এবং তা কত দ্রুত ব্লাড সুগারকে বাড়িয়ে দিতে পারে– এই বিষয়টিকে বলা হয় গ্লাইসেমিক ইনডেক্স। যে খাবারের গ্লাইসেমিক ইনডেক্স যত কম সেই খাবার খাওয়া তত বেশি নিরাপদ। কারন গ্লাইসেমিক ইনডেক্স বেশি মানে চিনির পরিমান বা গ্লুকোজের পরিমান বেশি। আর গ্লুকোজের পরিমান যে খাবারে যত সেই খাবার তত বেশি শঙ্কাজনক। এই হিসেবে লাল চালের গ্লাইসেমিক ইনডেক্স অনেক কম। সাদা চালের গ্লাইসেমিক ইনডেক্স যেখানে ৭০ সেখানে লাল চালের গ্লাইসেমিক ইনডেক্স মাত্র ৫৫। সুতরাং, নিঃসন্দেহে বলা যায় লাল চাল আমাদের দেহের জন্য আসলেই উপকারী।

আমন-চাল

আমন চালের পুষ্টি গুণাগুণ

পুষ্টিগুণ বিচারে এই চাল তুলনাহীন। কিন্তু কিভাবে? হ্যাঁ সেটি আমি নিচে তুলে ধরছি বিশদভাবে। এই চালে রয়েছে ফাইবার বা আঁশ যা মানবদেহের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি পুষ্টি উপাদান। ফাইবার যদি খাবারে বেশি পরিমানে থাকে তবে সেই খাবার হজম হয় আস্তে আস্তে ফলে ব্লাড সুগার বাড়ার প্রবণতাও অনেকাংশে কমে যায়। যেহেতু এই চাল রক্তে সুগারের মাত্রা খুব আস্তে আস্তে বৃদ্ধি করে তাই এটি বিশেষত ডায়াবেটিস ও হৃদরোগীদের জন্য খুবই উপকারী।

কেউ যদি প্রতিদিন এক কাপ সমপরিমান লাল চালের ভাত প্রতিদিন খায় তবে তার ডায়াবেটিসের ঝুকি কমে যায় ৬০ ভাগ। অন্যদিকে, এই চালের ফাইবার রক্তনালীতে ব্লক হওয়ার ঝুকি কমায়। ফাইবার সমৃদ্ধ এই চাল খেলে ক্ষুধা অনেক কম লাগে আর ক্ষুধা যত কম লাগবে আপনার খাওয়ার প্রবণতাও তত কমে যাবে ফলে মোটা হওয়ার ঝুকিও কমে যাবে। অনেকটাই। আর যারা অলরেডি মোটা হয়ে গেছেন তারা যদি নিয়মিত এই চালের ভাত খান তাহলে আপনাদের ওজন নিয়ন্ত্রন করা অনেক বেশি সহজ হবে।

এছাড়া এতে উপস্থিত সলিউবল বা দ্রবণীয় ফাইবার কোলন ক্যান্সারের ঝুকি কমাতে সাহায্য করে। ফাইবার আমাদের আরো একটি কঠিন সমস্যা সমাধান করে সেটি হলো কোষ্ঠকাঠিন্য। যাদের কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা আছে তারা যদি নিয়মিত ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার ও প্রচুর পানি পান করেন তাহলে এই মারাত্মক রোগটি থেকে সহজেই রেহাই পাওয়া সম্ভব হবে। সুতরাং বুঝতেই পারছেন আমাদের জন্য এই চাল আসলে কতটা গুরুত্বপূর্ণ।

কেন এই চাল সেরা?

এই চালে রয়েছে ম্যাগনেসিয়াম ও ক্যালসিয়াম যা একত্রে হাড়ের গঠন ও দাঁতের গঠন মজবুত করে। অস্টিপোরোসিস নামক হাড় ক্ষয়ের রোগ প্রতিরোধ করে। এছাড়া জয়েন্টে ব্যথা কমাতে সাহায্য করে। ম্যাগনেসিয়াম একটি ‍গুরুত্বপূর্ণ মিনারেল যা রক্তে মিনারেলের পরিমান কমিয়ে রক্তচাপ কমাতে সহায়তা করে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে ম্যাগনেসিয়াম আয়ন মাথাব্যথা কমায়। এই চালে উপস্থিত ভিটামিন১ বেরিবেরি রোগ প্রতিরোধে দারুণ ভূমিকা পালন করে থাকে।

অপরদিকে ভিটামিন বি৬ আমাদের ভারসাম্য নিয়ন্ত্রন করে ও সেরাটোনিন এবং নরএপিনেফরিন নামক হরমোন উৎপাদনে সহায়তা করে যা আমাদের মুড নিয়ন্ত্রন করে। আমন চালে উপস্থিত আয়রন লোহিত রক্তকণিকার হিমোগ্লোবিন তৈরীতে ব্যবহৃত হয়। হিমোগ্লোবিনের জন্যই রক্ত লাল দেখায়। কখনো কল্পনা করেছেন হিমোগ্লোবিন ছাড়া রক্ত আসলে কেমন দেখায়? এতে উপস্থিত জিংক ও ম্যাংগানিজ রক্ত তঞ্চনে সাহায্য করে ও কোথাও ক্ষত হলে সেটি সারাতে ভূমিকা পালন করে।

এই চালে রয়েছে নানান ধরনের অ্যান্টিঅক্সিডেন্টস ও ফাইটোনিউট্রিয়েন্টস যেমন অ্যান্থোসায়ানিন। অ্যান্থোসায়ানিন দেহে ফ্রি র‌্যাডিকেল কমাতে সাহায্য করে। ফলে ক্যান্সারের ঝুকি কমে যায়। এছাড়া এই অ্যান্থোসায়ানিন ত্বকের জন্য খুবই উপকারী। এটি এজিং এর প্রভাব কমায়, সূর্যের ক্ষতিকর আল্ট্রাভোয়োলেট রশ্মি হতে ত্বককে রক্ষা করে ও ত্বকের সোরিয়াসিস নামক রোগ থেকে মুক্তি দেয়। এতে উপস্থিত সেলেনিয়াম ও একটি অ্যান্টিঅক্সিডেন্টস। এটিও ফ্রি র‌্যাডিকেল কমাতে সাহায্য করে। এছাড়া এতে উপস্থিত ভিটামিন বি২ আমাদের বিপাকীয় ক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করে এই প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করে ও শক্তি উৎপাদনে সহায়তা করে। তাই বলা চলে, এই চাল আসলেই মানবদেহের জন্য খুব উপকারী।

খাস ফুডের আমন চাল কেন অন্যতম?

খাস ফুডের আমন চাল অন্যদের থেকে আলাদা। কারন আমাদের এই চাল সরাসরি কৃষকদের কাছ থেকে সংগ্রহ করে নিজস্ব তত্বাবধানে প্রক্রিয়াজাত করা হয়। এরপর এই চালকে খাস ফুড নিজস্ব প্রক্রিয়ায় প্যাকেটজাত করে এবং সেটি অবশ্যই আপনাদের সুযোগ সুবিধার কথা মাথায় রেখেই। আমাদের এই চাল সম্পুর্ণ প্রাকৃতিক প্রক্রিয়ায় উৎপাদন করা হয় ফলে স্বাস্থ্যঝুকি অনেক কম। উৎপাদনের প্রতিটি ধাপে গ্রহণ করা হয় বিশেষ ব্যবস্থা যাতে করে কোনোভাবে চালের গুনগত মান কমে না যায়। আমাদের চাল সম্পুর্ণ কঙ্কর বা মরা দানা মুক্ত তাই আপনি খেতে পারবেন নিশ্চিন্তে।

আপনাদের নিরাপদ খাবার পৌঁছে দেওয়াই আমাদের প্রধান লক্ষ্য। তাই এই চাল সংগ্রহ থেকে শুরু করে আপনার টেবিলে পৌঁছানো অব্দি মান নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করি। বিশুদ্ধতাই সুস্থ্যতা এই স্লোগান নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে খাস ফুড পরিবার। আপনার সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করাই আমাদের প্রধান লক্ষ্য। তাই আমরা সবসময় নিরাপদ খাবারের খোজে ছুটে যাই গ্রাম থেকে গ্রামান্তরে।

শুধুমাত্র আপনাদেরকে বিশুদ্ধ খাবার উপহার দিব বলে। বর্তমান সময়ে খাবারে ভেজাল একটি নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার। হাজারো ভেজাল খাবারের ভিড়ে বিশুদ্ধ খাবার পাওয়াই বড় চ্যালেন্জ। আর এই চ্যালেন্জকে সামনে রেখে খাস ফুড আপনাদেরকে নিয়মিত সরবরাহ করছে আপনার নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদী। আপনাদের সুবিধার্থে খাস ফুড দেশের কয়েক জায়গায় চালু করেছে আউটলেট যাতে আপনারা সহজেই আপনার পছন্দের পণ্যটি সশরীরে আউটলেটে এসে সংগ্রহ করতে পারেন। তাই আপনি যদি এই চাল নিতে চান চলে আসুন আমাদের আউটলেটে অথবা অর্ডার করুন অনলাইনে।

Leave a Reply