মৌসুমি ফল

আমের সাতকাহন

আমের-সাতকাহন

ছোটবেলা থেকেই আম ভীষণ পছন্দ সুরাইয়া ইসলামের। শুধুমাত্র আমের কারণে গ্রীষ্মকালের জন্য অপেক্ষায় থাকতেন তিনি। কিন্তু সে ইদানীং শরীরচর্চায় মন দিয়েছেন এবং শরীর ফিট রাখতে গিয়ে আম খাওয়া স্বাস্থ্যসম্মত হবে কী না এমন চিন্তায় ডুবে আছেন। তার মতে, আমে যেহেতু মিষ্টির পরিমাণ বেশি তাই আমের মধ্যে থাকা সুগার হয়তো ফ্যাট নিয়ে আসবে।তাই আজ আমের সাতকাহন নিয়ে আজকে আমাদের এই আয়োজন ।

তবে বিভিন্ন উৎস বলে, এমন ধারণা যে শুধু ভুল তাই নয়, হাস্যকরও বটে। অন্যান্য ফলের তুলনায় আমের ক্যালরি এবং সুগার মানুষের শরীরের জন্য মোটেই বেশি নয়। বরং পরীক্ষায় দেখা গেছে, প্রতিদিন একটি আম শরীরে সুগারের ভারসাম্য বজায় রাখতে চমৎকার সাহায্য করতে পারে। একটা ২০০ গ্রাম আম থেকে খুব বেশি হলে খাওয়া হয় ১২৫ গ্রাম। সেদিক থেকে দেখতে গেলে এটা শরীরের জন্য অত্যন্ত জরুরি।

রূপচর্চায় আগ্রহীগণের জন্য সুসংবাদ। আম ত্বককে চকচকে করতে সাহায্য করে। আমে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকার কারণে পরিপাক ক্রিয়াকে সক্রিয় রাখতে সহায়ক। পাকা আমের শাঁস হজম শক্তিকে স্বাভাবিক করতে খুব ভালো ফল দেয়। আম হিট স্ট্রোক থেকে বাঁচাতে কার্যকরী ভূমিকা রাখতে পারে। আমের একটি উল্লেখযোগ্য উপাদান হলো বিটা ক্যারোটিন, যা অ্যান্টি অক্সিডেন্ট। এ ধরনের অ্যান্টি অক্সিডেন্ট হৃদরোগ ও ক্যান্সার প্রতিরোধে সাহায্য করে। আমের হলুদ শাঁসালো অংশ শরীরে গিয়ে ভিটামিন ‘এ’ তে পরিবর্তিত হয়ে যায়। যা চোখের স্বচ্ছ দৃষ্টির জন্য খুবই উপকারী।

যাদের প্রেশারের সমস্যা রয়েছে তারাও আম খেতে পারেন। কেননা আমের একটি অন্যতম উপাদান হলো ম্যাগনেশিয়াম ও পটাশিয়াম। এ উপাদানগুলো ব্লাড প্রেসারকে স্বাভাবিক রাখতে সহায়ক। 

বিশেষজ্ঞদের মতে, বাংলাদেশের আমের মৌসুমকে মূলত তিন ভাগে ভাগ করা যায় । আগাম জাত, মধ্য মৌসুমি জাত এবং নাবি জাত।

– মে মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে জুনের মাঝামাঝি সময়ে পাকে আগাম জাতের আম। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল গোপালভোগ, গোবিন্দভোগ, বৃন্দাবনি, গুলাবখাশ, রানীপছন্দ, হিমসাগর, ক্ষীরশাপাত ও বারি-১।

– জুনের মাঝামাঝি থেকে পাকতে শুরু করে মধ্য মৌসুমি জাতের আম। এগুলো হল ল্যাংড়া, হাঁড়িভাঙ্গা, লক্ষণভোগ, খুদিক্ষীরশা, বারি-২, বোম্বাই, সুর্যপুরী ইত্যাদি।

-জুলাই মাস থেকে সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত পাকে নাবি জাতের আম। সেগুলো হল ফজলি, আম্রপালি, মোহনভোগ, আশ্বিনা, গৌড়মতি, বারি-৩, বারি-৪, ইত্যাদি।

বৃহত্তর রাজশাহী, যশোর, কুষ্টিয়া, দিনাজপুর ও রংপুর জেলা উন্নতমানের আমের জন্য বিখ্যাত ছিল। এসব এলাকা প্রধানত ল্যাংড়া, গোপালভোগ, ফজলি, হিমসাগর, মোহনভোগ, গোলাপ খাস, সূর্যপুরি, মিসরি ভোগ, আশ্বিনাসহ প্রায় কয়েক শ’ জাতের আম উৎপাদনে বেশ নামকরা। বর্তমানে বৃহত্তর সিলেট, চট্টগ্রাম, পার্বত্য চট্টগাম এবং বরিশাল অঞ্চলের জেলাগুলোতেও এ জাতের আম প্রচুর উৎপাদন হচ্ছে। 

কয়েক বছর ধরে আম্রপালি জাতের আমের পাশাপাশি যেসব জাতের আম চাষে অনেকেই আগ্রহী হচ্ছে তার মধ্যে রংপুরের হাঁড়িভাঙ্গা, ঠাকুরগাঁওয়ের বান্দিগুড়ি, চাঁপাইনবাবগঞ্জের গৌরমতি, বারি উদ্ভাবিত বারি-৪, বাউ উদ্ভাবিত বাউ-১৪ (ব্যানানা ম্যাংগো),  ‘রাংগুয়াই’ (বার্মা), পলিমার (ভারত), নান ডকমাই (থাই) অন্যতম।

খাস ফুডের ক্রেতারা সবসময়ই বিশেষ। আর তাই তো আমাদের চেষ্টা থাকে সর্বদা সেরাটা দেয়া। সে প্রচেষ্টাকে অব্যাহত রাখতে আমরা রাজশাহী অঞ্চল, সাতক্ষীরা অঞ্চল, চুয়াডাঙ্গা অঞ্চল, রংপুর অঞ্চলের সেরা মানের আম সরবরাহ করে থাকি। আমাদের সকল পণ্য সম্পর্কে জানতে আমাদের ওয়েবসাইটের পণ্যের তালিকা ভিজিট করতে পারেন। এছাড়াও নিত্যনতুন সব পণ্য সম্পর্কে জানতে আমাদের ফেইসবুক পেইজ, ইন্সটাগ্রাম, ইউটিউব বা টুইটারে ফলো করতে পারেন। চাইলেই জয়েন করতে পারেন আমাদের ফেইসবুক গ্রুপেও। যেখানে জানবেন এবং জানাবেন খাস ফুডকে নিয়ে আপনার মূল্যবান মতামত সমূহ। 

শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা এবং কর্মদক্ষতা বাড়িয়ে তুলতে পারে একটা পাকা এবং তাজা মিষ্টি আম। তাই শুধু সুস্বাদু মৌসুমি ফল হিসেবে নয়, শরীরের নানাবিধ সমস্যার সমাধান খুঁজতে প্রতিদিনের খাবার তালিকায় আম রাখা বিশেষ প্রয়োজন।

কেমন লাগলো আমাদের এই আমের সাতকাহন তা জানাতে ভুলবেন না।

Related Posts

Leave a Reply